ইমরান আনসারী: তথ্য প্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রযাত্রার হাওয়া লেগেছে গণমাধ্যমে। অনেকে বলেন মোবাইল এখন রাইফেলের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করে। কারণ এর সাথে এখন যোগ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। আপনি হয়তো নির্দিষ্ট কোনো মিডিয়ার কনটেন্ট দেখার ইচ্ছাই পোষণ করলেন না, কিন্তু এলগরিদম আপনার যুদ্ধ নিয়ে ভাবনা-চিন্তার বিষয়টি আন্দাজ করে আপনার সামনে নাম না জানা অনেক গণমাধ্যমের তথ্য স্টোরি লাইনে হাজির করছে। এতে যেমন সুবিধা হয়েছে তেমনি ভূয়া তথ্য ছড়ানোর উপদ্রুপ বেড়েছে বহুগুণে। ফলে পাঠক, শ্রোতাদের বিভ্রান্ত হবার বিষয়টি ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা গণমাধ্যমের রেইসিস্ট চেহারাও দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেইক নিউজের ছড়াছড়িতে সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
পাশাপাশি চলছে এ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন ধরনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ। গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা এ যুদ্ধ কাভারেজে সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়ে উঠেছে।
পক্ষপাতদুষ্ট গণমাধ্যম
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সিবিএস নিউজের প্রতিবেদক চার্লি ডাগাটা তার লাইভ কাভারেজে বলছিলেন- আমরা ইরাক, আফগানিস্তানে বছরের পর বছর যুদ্ধ দেখেছি, কিন্তু এখন অবশ্য অপেক্ষাকৃত সভ্য ইউরোপে এর চিত্র দেখতে পাচ্ছি। তার দৃষ্টিতে ইরাক ও আফগানিস্তান অসভ্য একটি অঞ্চল। যাতে ওই প্রতিবেদকের রেসিস্ট মনোবৃত্তি উন্মোচিত হয়েছে। পরে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তোপের মূখে পড়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। এদিকে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের ডেপুটি চিফ প্রসিকিউটর , ডেভিড সাকভারেলিডজে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, হ্যাঁ আমার জন্য এটি খুবই আবেগপ্রবণ বিষয়, কারণ আমি দেখছি নীল চোখ এবং স্বর্নকেশী চুলের ইউরোপীয় লোকদেরও হত্যা করা হচ্ছে”। তার এ বক্তব্যের অর্থ এই দাঁড়ায়- কালো কিংবা ব্রাউন বর্ণের মানুষদের হত্যায় তেমন কোনো দোষ নেই। তার এই দেখার দৃষ্টিভঙ্গি সাদা চামড়ার মানুষদের রেসিস্ট মনোবৃত্তির বার্তা বহন করে।
এছাড়া বৃটিশ টিভি নেটওয়ার্কে আরেক প্রতিবেদককে লাইভে এসে বলতে শোনা যায় , “এটা চিন্তারও বাইরে যে, এখন ইউরোপীয়ানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চলছে। এটা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ নয় , এটা সংঘঠিত হচ্ছে খোদ ইউরোপে”। অর্থাৎ তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল কোনো দেশে সহিংসতা, যুদ্ধ চলতে পারে , তাদের রক্ত ঝড়বে। তারা উদ্বাস্তুর মতো জীবন ধারণ করবেন। এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু ইউরোপে এটি কি করে সম্ভব?
যুদ্ধে গণমাধ্যম
যুদ্ধক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা নতুন কোনো ঘটনা নয়। একবিংশ শতাব্দীতে অস্ত্রের পাশাপাশি গণমাধ্যম অনন্য সাধারণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, চূড়ান্ত যুদ্ধের সূচনা হয় কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের মাধ্যমে। এর পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র যুদ্ধে অনন্য সাধারণ ভূমিকা পালন করে। পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কাভার্ট অ্যাকশন নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র সিগনালিং এর কাজ করেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত গণমাধ্যম ব্যবহার করে “মনোজাগতিক যুদ্ধ” চালিয়ে বেশ সাফল্য লাভ করেছে বলে মনে করেন ভারতীয় সমরবিদরা।
আর বিশ্ব ইতিহাসের দিকে তাকালে স্পেনিশ আমেরিকান যুদ্ধকে ”প্রথম মিডিয়া যুদ্ধ” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ এ যুদ্ধে সামরিক অভিযানে গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করা হয়। এ যুদ্ধের সময় পত্রিকাগুলো যুদ্ধের পক্ষে সুরসুরি দেয়া আর্টিক্যাল নিয়মিত প্রকাশ করতো। এর প্রায় ৬০ বছর পর সংঘঠিত ভিয়েতনাম যুদ্ধকে অভিহিত করা হয় “প্রথম টেলিভিশন যুদ্ধ” হিসেবে । বিভিন্ন টেলিভিশন, পত্রিকা ও রেডিও’র প্রায় ৬০০ সাংবাদিক এ যুদ্ধ কাভার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট পাবলিক এফেয়ার্স অফিস প্রতিদিনই যুদ্ধ সম্পর্কে ব্রিফিং প্রদান করতো, যাকে সবাই “the five o’clock follies” নামে অভিহিত করতো। । তাই সন্ধ্যা হবার সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি ঘরে যুদ্ধের আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ত আমেরিকার নাগরিকরা।
১৯৬৮ সালে সিবিএস টিভি চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপক ওয়াল্টার ক্রনকিট- কে অভিহিত করা হত “ আমেরিকার সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ” হিসেবে। যুদ্ধ নিয়ে তার শক্ত মতামত আন্দোলিত করতো যুক্তরাষ্ট্রের জনগনকে। তার উপস্থাপনায় মুগ্ধ হয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেন্ডন ভি জনসন বলতে বাধ্য হন “ আমি যদি ক্রনকিট-কে হারিয়ে ফেলি, তাহলে ধরে নেবেন আমি মধ্য আমেরিকাকেই হারিয়ে ফেলব”।
১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে সিএনএন একটি বৈশ্বিক গণমাধ্যমের ব্রান্ড হিসেবে আবির্ভূত হয়। সেই থেকে ”এমবেডেড জার্নালিজম” এর প্রচলন ব্যাপকভাবে দেখা যায় যুদ্ধের ময়দানে।
বিশ্বে “প্রথম ইন্টারনেট যুদ্ধ ”কোনটি তা নিয়ে গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে । কেউ কেউ বলছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম ইন্টারনেটের ব্যবহার হয় যুগোস্লাভিয়ার গৃহযুদ্ধে ১৯৯০ সালে। মূলত ৯/১১ টুইন টাওয়ারে হামলার পর বিশ্বজুড়ে শুরু হওয়া ”ওয়ার অন টেরর” এর সময়ে মানুষ যুদ্ধের ময়দান থেকে সরাসরি সংবাদ উপভোগ শুরু করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার যুদ্ধ
অনেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে “সোশ্যাল মিডিয়ার প্রথম যুদ্ধ” হিসেবে আখ্যায়িত করলেও সাম্প্রতিক তালেবানদের কাবুল অভিযানকে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রথম যুদ্ধ হিসেবে অনেকেই বিবেচনা করছেন।
আফগান সুসজ্জিত বাহিনীকে পরাস্ত করতে তালেবান সামরিক হামলার পাশাপাশি সৈনিকদের মনোবল ও সংহতি ভাঙ্গার কাজটি করে খুবই দক্ষতার সাথে। সমরবিদ সান টোজ-এর মতানুসারে, যেকোনো যুদ্ধে একটি বাহিনীর মনোবল ও যুদ্ধ জয়ের আকাঙ্খা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটি দিক। তালেবানরা আফগান বাহিনীকে শারীরিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে মনোযোগী হয় একটি মনোজাগতিক যুদ্ধের মূখোমূখি করার মাধ্যমে। আর এতে তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। জেনে রাখা ভালো, আফগানিস্তানের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষই এখন মোবাইল ব্যবহার করে। আর তালেবানরা সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেইক আইডি খুলে ব্যাপক ভিত্তিক তথ্য যুদ্ধ পরিচালনা করে। ব্যাপক ভিত্তিক প্রোপাগান্ডা আফগান সৈনিকদের মনোবল ভাঙ্গতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে তারা আফগানিস্তানের বিভিন্ন উপজাতির সিনিয়র সদস্যদের ব্যবহার করেন, যাতে তারা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে তালেবানদের কাছে আফগান বাহিনীর আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাতে পারেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন টুইটার অ্যাকাউন্টে ভিডিও আপলোড করা হয়, যেখানে আফগান বাহিনী বিভিন্ন শহরে তালেবানদের কাছে আত্মসমর্পন করছে সে দৃশ্য দেখানো হয়। ওইসব ভিডিও আবার মোবাইলে মেসেজ আকারে পাঠানো হয় আফগান বাহিনীর বিভিন্ন জেনারেলদের কাছে। যেখানে ক্যাপশনে লেখা থাকতো- “আপনি একটি যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে আছেন, খাদ্য ও গোলাবারুদ ফুরিয়ে যাচ্ছে, একটি অজনপ্রিয় সরকারের জন্য লড়াই করছেন । আপনি যখন আপনার মোবাইল ফোনের দিকে তাকান, আপনি যা দেখছেন তা হলো সহযোদ্ধাদের আত্মসমর্পণের ছবি। এমনকি যদি আপনি যুদ্ধ করতে চান, তবুও আপনার মনোবল এবং লড়াই করার ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হয়েছে”।
এবার আসা যাক রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে। রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধে হতাহত হবার ঘটনা সাধারণ নাগরিকরাই মোবাইলের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করছেন। যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে দুনিয়াজুড়ে।একেকজন নাগরিক হয়ে উঠছেন ‘যুদ্ধ সংবাদদাতা’ । ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগের অধ্যাপক ইউলিয়াম বি পিলফ্রি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া সশস্ত্র সংঘাতে একটি রুপান্তরমূলক উপাদানের প্রতিনিধিত্ব করছে, যা আমরা কখনও দেখিনি”।
রাশিয়ান ট্যাংকের সামনে বিনা অস্ত্রহাতে ইউক্রেনীয়দের দাঁড়িয়ে যাওয়া খোদ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করছে। যেখানে রাশিয়ার জনগণ ইউক্রেন দখলকে স্বাগত জানাবার কথা সেখানে এখন যুদ্ধবিরোধী বড় বড় সমাবেশ হচ্ছে। এগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব হিসেবে দেখছেন গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা। কারণ রাশিয়ায় গণমাধ্যম স্বাধীন নয়। তাইতো প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ায় ফেসবুক ও টুইটার ব্লক করেছেন । শুধু তাই নয়, ভূয়া সংবাদ প্রচার করলে সাংবাদিকদের ১৫ বছরের জেল হবে বলে ডিক্রী জারি করেছেন । পক্ষান্তরে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ার সকল টুলস ব্যবহার করছেন। তিনি টিকটক, ইন্সট্রাগ্রাম, টুইটার ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে সৈন্যদেরকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এই উপস্থিতি ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের যুদ্ধে দারুণভাবে সম্পৃক্ত করেছে। অনেকে তাদের পরিবারকে পোল্যান্ডে রেখে এসে রাইফেল কাঁধে যুদ্ধের ময়দানে ফিরে এসেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণেই দ্রুত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের আহ্বান পৌঁছে যাচ্ছে প্রান্ত থেকে প্রান্তরে। বলা চলে রিয়েল টাইমে। বিদেশী নাগরিক যারা ইউক্রেনের পক্ষে লড়বে তাদের ভিসা লাগবে না এমন ঘোষণায় অনেক বিদেশীরা বন্দুক হাতে তুলে নিয়েছেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এ যুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের সোশ্যাল মিডিয়ার অত্যাধিক ব্যবহারে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে যুদ্ধ ক্ষেত্রে নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে ইউক্রেনের জন্য। যুদ্ধ ক্ষেত্রে ওএস আই এন টি তথা ওপেন সোর্স ইন্টিলিজেন্টস-এর মাধ্যমে ন্যাটোভূক্ত সদস্য রাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞরা দ্রুত গতিতে রাশিয়ার সৈন্যদের তৎপরতা নিবিড়ভাবে পর্যক্ষেণ করতে পারছেন এবং ইউক্রেনকে পরামর্শ দিতে পারছেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে। ওপেন সোর্স ম্যাপে রাশিয়ার প্রতিটি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানের তৎপরতা নিরুপণ করা হচ্ছে। রাশিয়ার সাঁজোয়া যানের ৪০ মাইলব্যাপী বহর কেন হঠাৎ থেমে গেল তার বিশ্লেষণ আসছে নাগরিকদেরর ড্রোনের সাহায্যে নেয়া সোশ্যাল মিডিয়ার ফুটেজের মাধ্যমে। যা রাশিয়ার মতো একটি মহাশক্তির বিপরীতে ইউক্রেনকে নতুন নতুন সুবিধা করে দিচ্ছে। ইউক্রেনের দাবী অনুসারে এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি রাশিয়ান সৈন্য ইতিমধ্যে জীবন দিয়েছেন। যার কিছুটা সত্যতা স্বীকারও করে নিয়েছেন পুতিন। সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ এখন তথ্যের ”ফায়ার হাউসে” পরিণত হয়েছে। যা রিয়েল টাইমে ইউক্রেনের সামরিক কৌশলের অনন্য মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ এখন মূলধারার গণমাধ্যমের চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট বেশি দেখছে। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র টিকটকে ৬০ মিলিয়ন মানুষ #Ukraine এর কনটেন্ট দেখেছে। প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার কনটেন্ট ইতোমধ্যেই আপলোড হয়েছে টিকটকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব কনটেন্ট সবই যে সত্য তা কিন্তু নয়। অনেকে আগের কোনো যুদ্ধের ছবি আপলোড করে দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ দর্শক-শ্রোতাদের ওপর । টাইম নিউজের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে , যে যতবেশি সময় সোশ্যাল মিডিয়া দেখছেন সে ততো বেশি ট্রমাটাইজ হয়ে যাচ্ছেন, যা তাদের পরবর্তী কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাঁধা সৃষ্টি করছে। এদিকে রাশিয়া থেকে ব্যাপকভিত্তিক ফেইক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে এমন তথ্যে রাশিয়া থেকে সকল ধরনের অ্যাডভার্টাইজ বন্ধ ঘোষণা করেছে ফেসবুক, টুইটার, টিকটক ও গুগল। পরিস্থিতি যেদিকে এগুচ্ছে যুদ্ধটি শুধুমাত্র সামরিক কিংবা অর্থনৈতিক নয়, বরং এটি গণমাধ্যমের যুদ্ধ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এ যুদ্ধ এখনই থামাতে হবে । একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবীর জন্য।
লেখক: আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও শিক্ষক, স্টেইট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্ক । সূূএ:মানবজমিন